Header Ads

বাংলা সিনেমার ইহোকাল




প্রসঙ্গ বাংলা সিনেমা। বাংলা সিনেমার বাজার ও নানা অপ্রিতিকর কারনে  বিষয় টা আকৃষ্ট করলো। এই আকৃষ্ট করার নানা কারন নিয়েই আজকের পোস্ট।

কয়েকদিন থেকেই দেখছি বাংলা সিনেমা জগৎ নিয়ে বেশ তোলপার চলছে।   বিশেষ করে পত্র পত্রিকায়,  পরিচালকদের মুখে ও পোস্টে এবং সাধারন জনগনের মুখে ও ফেসবুক পোস্ট এ। সাধারন মানুষের ও পত্রিকার গুলোর অভিযোগ তারা মানষম্মত সিনেমা পাচ্ছে না। সিনেমা গুলো তাদের প্রতিবার হতাশ করছে হল মুখি হতে। অন্যদিকে কিছু পরিচালকের কথা,  সাধারন মানুষের কাছে নাকি  সিনেমা ভালে লাগছে,  কিন্তু কিছু কুচক্রি দল পরিকল্পনা করে এসব রটাচ্ছে!

এখন আসি আমার বক্তব্যে। জাজ মাল্টিমিডিয়ার দেয়া এক তথ্যে জানা যায়, একটা নিম্ন বাজেটের সিনেমা বানাতে তাদের খরচ হয় ১.৫ কেটি টাকা।( অন্য প্রোডাকশন গুলোর কথা তেমন বলতে পারছিনা। এখানে উল্লেখ্য যে, জাজের প্রথম দিকের সিনেমার বাজেট থাকতো ৫০ লক্ষ  টাকা, এবং আমার জানামতে তাদের সবচেয়ে ব্যবসা সফল সিনেমা,  "অনেক সাধের ময়না"।  বাজেট ছিলো ৫০ লক্ষ এবং বক্স অফিস, ৭০লক্ষ। বাদ বাকি দুই একটা ছাড়া সব গুলোই লোকশান করিয়েছে। )   আর তাদের মতে একটা সিনেমা যদি সারা বাংলাদেশের ১০০টি হলে চলে তাহলে হলের সকল খরচ বাবদ তাদের থাকে গড় এ ২৭ লক্ষ টাকা। তার উপর এক সাথে একের অধিক সিনেমা মুক্তি পেলে এ সংখ্যা আরও কমে যায়। বুঝিনা পরিচালকদের টাকা কি গাছে ধরে?? তারা নাকি নিজেদের ক্ষতি করে বাংলা সিনেমাকে এগিয়ে নিতে চাই। যাইহেক, তাদের মতে যা দাড়াল, বেশি আয় করতে হলে প্রথমত দরকার দর্শক ও অধিক পরিমানে হল। কিন্তু দেখা যায় বেশির ভাগ সমায় হলে হাউজ ফুল হইনা। এর কারন কি? কারন সিনেমা মানুষের মন জয় করতে পারেনা! যার করনে মানুষ হলে যেতে পছন্দ ও করছেনা। বাংলাদেশে নতুন হল এর প্রয়োজন। এবং সিনেমা জগৎ এর সকলের ই দাবি এটা।  কিন্তু কেনই বা নতুন হল বানাবো, যখন পুরাতন হল গুলোতেই মানুষ যায় না! এমন তে না যে, একটা শহরে একটা মাত্র হল দিয়ে মানুষের চাহিদা পুরন হচ্ছেনা। আর সরকার ই বা কেন এগিয়ে আসবে যখন সিনেমা গুলোই সাধারন মানুষ পছন্দই করছেনা!

অন্যদিকে নকল সিনেমা তো আছেই! তামিল, হিন্দি, ইংলিশ,  যেখান থেকে যা ভালো লেগেছে সেটাই নকল করেছে। তার উপর নকলটা এমন অতিরিক্ত পরিমান বাজে করে যে যেখান থেকে নকল করা সেটার উপর থেকে ও রুচি হারিয়ে যায়। সিনেমা সৃজনশীলতার জন্য।  কপি আর পেস্ট করে ক্রিয়েটিভ হওয়া যাইনা। ঐ সিনেমা দেখে লাভটা কি,  যে সিনেমার বেশিরভাগ অংশই আমি অন্য কোথাও এর আগেই দেখেসি। আর আপনারা হল মুখি হতে বলেন?! বেপারটা এরকম হয়ে যায় না, যে শখ করে ১৮০টাকা দিয়ে রেডবুল এনার্জি ড্রিংস্  কেনার পর খুলে দেখছি কোকাকলা তে ভরা। এখন এটা খব না ফেলে দিব? ১৮০ টাকা নষ্ট করে ২০ টাকার কোক পেলাম, যেটা প্রতিদিনই খাই।

আপনারা বলেন বাংলা সিনেমার  মার্কেট এমনিতেই খারাপ। তার পর ও কেন এত সমালোচনা! আমি বলি সমালোচক এর দরকার আসে। সমালোচক ছাড়া কোন কিছুর উন্নতি সম্ভব না বলে আমি মনে করি। তবে এই বেপারে সমালোচনা যথেষ্ট যুক্তি যুক্ত। বন্ধুদের সাথে  অস্তিত্ব,  মুসাফির, আইস্ক্রিম এর মত  সিনেমা হলে গিয়ে দেখেছি। সব কিছু পারফেক্ট হয়েছে এরকম আমার মনে হইনি। অনেক ল্যাগিং আছে সিনেমা গুলোতে। পদ্মা নদীর মাঝি, মাটির ময়না, দিপু নাম্বার ২, অথবা আমার বন্ধু রাসেদ এর মত নয় জানি। এটা ও জানি এগুলো বাণিজ্যিক সিনেমা। তার পর ও অভিনয় র কাহিনিগুলোতে একটা আর্ট থাকা উচিত। বাজে এক্টিং, অযথা যখন তখন উলটা পালটা গান, আর অযথা গল্পে রং মাখা মাখি কি আসলেই ভালো লাগে?? নাকি আমরা সিনেমা গুলোকে ভারতীয় বানাতে চাই??? আমাদের নিজেদের সংস্কৃতির কি কোন জাইগা নাই সিনেমা জগতে??

আমার মতে প্রচুর পরিমানে বিদেশি ছবি বাংলাদেশের হলে মুক্তি দেয়া উচিৎ।তবে আমি পাওয়ার, পাগলু, অথবা গ্রান্ড মাস্তি, মাস্তি জাদে, কিংবা তিশমার খান এর মত সিনেমার কথা বলছিনা। থ্রি ইডিওট, গাং অফ ওয়াসিপুর, ২২শে শ্রাবন, শংখ্যচিল অথবা, শওশাংক রিড্যম্পসন,  রেভিনেন্ট এর মত ভালো ছবি আসুক। এতে অন্তত সিনেমা হলের ব্যাবসা বাড়বে।আপনারা প্রতিযোগিতা করতে শিখেন। প্রতিযেগিতায় নামলে টিকে থাকার লড়ায়ে এমনি ভালো ছিনেমা তৈরি হবে। আপনারা বিদেশী চ্যানেল/সিনেমা বন্ধ করে আপনাদের টা চালাতে চান। এই ইন্টানেটের যুগে এটা কি সম্ভব? কয়জনকে আটকে রাখবেন? ডিসকোভারি চ্যানেল বন্ধ করে যদি ঢাকার চিড়িয়াখানার গাধা আর বানরের নাচ লাইভ দেখান তাহলে মানুষ দেখবে?

শুনেসি আগে বাংলা সিনেমা বাংলার ঘরে ঘরে সারা ফেলত। আর এখন?? এখন মানুষ ছি ছি করে। আচ্ছা, স্যত্তজিৎ এর সিনেমা কি মানুষ দেখেনি?? সিরাজউদ্দৌলা, পদ্মা নদীর মাঝির মত সিনেমা কি চলেনি?? নায়ক রাজ রাজ্জাকের সময়ের সিনেমা কি মানুষ দেখেনি?? যদি নাইবা চলত তাহলে আমার মা এখনও কেন গুনগুন করে পুরোন বাংলা সিনেমার গান গাই?? সেই সিনেমার বাজেট ও কি এখনকার ৬ কোটি টাকার সমান ছিলো? কম বাজেট এ দেশের হাজার বছর ধরে  ঘটা ঘটনা নিয়েও সিনেমা বানানো যায়। যেটা দেখলে আবার ও দেখতে ইচ্ছা হই। কোটি কোটি টাকা খরচ করে,  ২০-২৫ টা ব্যান্ড নিউ গাড়ি ভেঙ্গে নায়ক চরিত্রের এনট্রি দেখানর তো কোন দরকার নেই।

No comments

copyright b33 © 2016. Powered by Blogger.